By মুক্তি বার্তা
অজ্ঞাত উৎসের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে- আতংকে এলাকাবাসী
বুধবার (১২ আগষ্ট) সকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডেও শালমারা গ্রামের ১০টি ঘরে গিয়ে দেখা যায় আলনা, শাড়ি কাপড়, তোষক, জামাকাপড়সহ নিত্য ব্যবহারের কাপড় অজ্ঞাত উৎসের আগুনে পুড়ে যাওয়ায় জামাকাপড়সহ অন্যান্য সামগ্রী বাড়ির আঙিনায় স্তূপ করে রেখেছেন।
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরের শালমারা গ্রামের ১০ পরিবারের অর্ধশত মানুষ আগুন আতঙ্কে দিনরাত পার করছেন। অজ্ঞাত উৎসের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে বাড়ির আঙিনায় খড়ের ঘর, কাপড়চোপড় ও বিছানাপত্রে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক কানু দে বলেন, ২৪ জুলাই সকালে তিনি বাড়ির আঙিনায় বসে ছিলেন। এমন সময় তার খড়ের ঘর থেকে ধোয়া ওঠতে দেখে তিনি এগিয়ে যান। বাতাসে খড়ের ঘরের আগুন আরো জ্বলে ওঠে। পরে তিনি চিৎকার দিলে পাড়া প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজন এসে আগুন নিভায়।
চন্ডী চরণ দে বলেন, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রোদে শুকাতে দেয়া কাপড়গুলো অনেক সময় আগুনে পুড়ে যায়। এক জায়গার আগুন নিভাতে না নিভাতেই অন্য জায়গায় আগুন লেগে যায়।
নন্দিতা রানী দে বলেন, বাড়ির নারী পুরুষ সবাই গত তিন সপ্তাহ ধরে গায়েবি আগুন আতঙ্কে ঘুমাতে পারেন না। দিনে রাতে বাড়ির সবাই আগুনের ধোয়া খুঁজে বেড়ান। সন্ধ্যা রানী দে বলেন বাড়িঘরে বালতি ভরে আগুন নিভানোর পানি রেডি করে রাখেন সব সময়।
লক্ষ্মীরানী দে বলেন, তাদের বাড়িতে কচুখালী গ্রামের পারুল রানী দে বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় শাড়ির আচলে আগুন লেগে যায়। এছাড়া বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ঘরে সবজি কাটার সময় মমতার শাড়ির আচলে আগুন লেগে যায়।
ফতেহপুর ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিজয় কর বলেন, জুলাই মাস থেকে এভাবে আগুন লাগার ঘটনা চলে আসছে। প্রথমে কেউ গুরুত্ব না দিলেও বিশ্বম্ভরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা অস্বাভাবিক আগুন লাগার কারণ উদঘাটন করতে শালমারা গ্রামে এসে ছিলেন। তারা ওই বাড়িগুলোতে এক রাত অবস্থান করেন। তারা থাকাকালীনও বাড়িগুলোতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে কোথা থেকে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ও তা নির্ণয় করতে পারেননি।
বলাই দাস বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সদস্যরা শোর চিৎকার শুরু করলে গ্রামবাসী এসে আগুন নিভানোর কাজ করেন। এভাবে চলছে এখন তাদের দিনরাত। বীরেন্দ্র দে জানান, তার ঘরে দুইবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বাইরে রাখা খরের দুটি খড়ের ভোলায়ও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিন বিকাল ৫ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আগুন লাগার ঘটনা ঘটে বেশি।
আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা জানান, আগুন লাগার শুরুতে ধোয়া ওঠে পরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। কখন কোন দিকে আগুন লাগবে তারা কেউ জানেন না। সেজন্য বালতি ড্রাম ভর্তি করে আগুন নেভানোর জন্য পানি রেডি রাখেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ হিমাংশু রঞ্জন সিংহ বলেন, এভাবে আগুন লাগলে আতঙ্কিত না হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয় এ বিষয়ে তাদের কোন ধারণা নেই। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের আগুন নেভানোর কলাকৌশল বলে দেয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই বাড়িগুলোতে অবস্থান কালেও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে কোনো ধরনের গ্যাসের কারণে এরকম হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া সঠিক ভাবে কোন কিছু বলা যাচ্ছে না। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও দিয়েছেন।সুত্র-ডেইলি বাংলাদেশ
মুবার্তা/এস/ই