By মুক্তি বার্তা
ডিজিটাল যুগে রেল লাইন সংস্কারে পাথরের বদলে বালি আর ইটের খোয়া
লাইন যাতে দেবে না যায় সেজন্যই পাথর দিয়ে রেললাইন শক্ত রাখা হয়, সেটা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। অথচ ডিজিটাল যুগে লাইন সংস্কারে দেখছি বালি আর ইটের খোয়া। এটি কেমন সংস্কার।
মঙ্গলবার বিকালে এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ উসমান আলী ও শওকত হোসেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ময়মনসিংহ জংশনের আউটার সিগন্যাল থেকে কেওয়াটখালী লোকোশেড পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রেললাইন সংস্কারে পাথর না ফেলে এভাবেই বালু ও নিম্নমানের সুঁরকি ফেলে সংস্কার করা হচ্ছে। কোনো রকম তদারকি ছাড়াই কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে নগরবাসীর মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে।
‘পাথরের বদলে ইটের সুঁরকি’ এমন খবরে মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক ছুটে যান সংস্কার কাজ পরিদর্শনে কেওয়াটখালী। সেখানে বালি-সুঁরকি ফেলে লাইন সংস্কারের দৃশ্য দেখে উপস্থিত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এ সময় তিনি সংস্কার কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম, সংস্কার ব্যয় ও ওয়ার্ক অর্ডার দেখাতে ব্যর্থ হন। রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী কাজে দেখভাল করলেও এ ব্যাপারে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি বলে জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
আয়েশা হক যুগান্তরকে জানান, যেকোনো উন্নয়ন বা সংস্কার প্রকল্পে কাজের ধরন নিয়ে সাইনবোর্ড লাগাতে হয়। কিন্তু রেলওয়ের এই সংস্কার কাজে কোনো সাইনবোর্ড নেই। এমনকি রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হাসানকে মোবাইল ফোনে সংস্কার প্রকল্পের কাগজপত্র নিয়ে বিকালের মধ্যে আসার নির্দেশ প্রদান করা হলেও তিনি আসেননি- এটি খুবই দু:খজনক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাথরের পরিবর্তে বালি ও নিম্নমানের সুঁরকি ফেলায় এতে রেললাইন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমীন কালাম বলেন, রেললাইন নির্মাণে ইটের খোয়ার পরিবর্তে পাথর ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে প্রতিবাদে কর্মসূচি দেয়া হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ জানান, রেললাইন সংস্কারের নামে এখানে সরকারি অর্থ অপচয় এবং পরিকল্পিত লুটপাট চলছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।
রেলওয়ে ময়মনসিংহের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান জানান, রেল চলাচল স্বাভাবিক রাখতে টেন্ডারের মাধ্যমে সাময়িকভাবে রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প ব্যয় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে রাজি হননি তিনি।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
মুবার্তা/এস/ই