আজঃ শুক্রবার ● ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ ● ৩ মে ২০২৪ ● ২৩শে শাওয়াল ১৪৪৫ ● রাত ১১:০০
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

চৌগাছার ৭১’র রাজাকার মুজাহিদ আড়াল করতে এতো প্রচেষ্টা কেনো??

ফাইল ছবি

উপজেলার সেই প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত অস্ত্রধারি রাজাকার মুজাহিদ ও তার পরিবারকে আড়াল করতে সর্বোচ্চ কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে স্থানীয় কিছু সুবিধাবাদি চিহ্নিত প্রতারক চক্র। সেকারনেই কুখ্যাত রাজাকার মুজাহিদ ও স্বাধীনতা বিরোধী এই পরিবারটির বিরুদ্ধে মানব বন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করায় প্রতিবাদকারিদের বিরুদ্ধে ২৬ আগষ্ট স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে “চৌগাছায় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা” শীর্ষক যে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে প্রকাশিত সংবাদটি সত্য নয় বলেই জানিয়েছেন চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব। তিনি বলেন,২৪ আগষ্ট আমি পুলিশি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে জেলা সদরে ছিলাম। তবে থানার যে কর্মকর্তা ঘটনা তদন্ত করতে গিয়েছিলেন (এসআই মেহেদি হাসান) তিনি আমাকে বলেছেন যে এমন কোন ঘটনা কড়ইতলা বাজারে ঘটেনি। সেখানে ঝুলানো ২১ আগষ্টের একটি ব্যানার (যেটি নসিমন নামে চিকন এক ধরনের দড়ি দিয়ে বাধা ছিল) বাতাসে সেটি খুলেগিয়ে থাকতে পারে। পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যবসায়িদের নিয়ে তিনি আবারো সেটি ঝুলিয়ে দিয়ে আসেন। তবে সেখানে কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। কথা হয় সেদিন তদন্তে যাওয়া এসআই মেহেদির সাথে। তিনি বলেন মোবাইল ফোনে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে (কড়ইতলা বাজার) গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম ২১ আগষ্টের একটি ব্যানার যা নসিমন দড়ি দিয়ে বাধাছিল সেটি বাতাসে খুলেগেছে। কোথা থেকে খুলেছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ব্যানারের যেখানে বাধা থাকে সেখান থেকে। তারপর যে অভিযোগ করেছিল তাকে জিজ্ঞেষ করলে বাজারে উপস্থিত সকলেই আমাকে জানিয়েছে কেউ ব্যানারটি ছেড়েনি। তখন আমি অভিযোগকারি বললাম,সকাল দশটার একটি ঘটনা শুধু আপনিই দেখলেন আর কেউ দেখলোনা। অভিযোগকারির নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একটু কাজে যশোরে আছি। থানায় ফিরে বলতে পারবো।

এদিকে উপজেলার এই চিহ্নিত রাজাকার ও তার পরিবারের ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ,যুব লীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান রাজাকার মুজাহিদ ও স্বাধীনতা বিরোধি এই পরিবারটির বিরুদ্ধে আগে থেকে কঠোর অবস্থানে আছেন। ১নং ফুলসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদি মাসুদ চৌধূরী বললেন, আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জন্মগ্রহন করেছি। তবে আমার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমানের কাছে মুজাহিদ খুলনায় রাজাকারের প্রশিক্ষন নিয়েছেন বলে শুনেছি। তিনি বলেন,একটি বাজার বা সড়ক কিংবা অন্য যাই কিছু হোক সেটির নাম করন করতে গেলে প্রথমেই ইউনিয়ন পরিষদ ও পরে উপজেলা থেকে রেজুলেশন করা লাগে। তারপরে সেটি জেলা পরিষদ হয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদন হয়ে আসে। তাহলে কিভাবে আহমদ আলীর নামে নামকরন হলো??

উপজেলা পরিষদের দুবার নির্বাচীত ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগের আহ্বায়ক দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, মুজাহিদ সম্বন্ধে কে জানেনা। কিভাবে একজন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত অস্ত্রধারি রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীর বাবার নামে একটি বাজারের নামকরন হয়। তিনি বলেন, কে বা কারা তাদের মদদ দিচ্ছে তাদেরকে খুজে বের করে জনসন্মুখে এই পি মদদ দাতাদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক শরিফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে কোনো আপোষ নেই। ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুজ্জামান রাজু বলেন, আগষ্ট মাস এলেই এতা ষড়যন্ত্র হয় কেনো। আর একজন চিহ্নিত প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধী পরিবার হঠাৎ করে কেনো শোক জাতিয় শোক দিবস পালন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো সেটা আমার বুঝে আসেনা। আমরাও আমাদের ছাত্রলীগের প্যাডে এ বিষয়ে দ্রতই বিবৃতি দেবো বলে জানালেন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাজু।
এদিকে যাদেরকে সন্ত্রাসী বানিয়ে সংবাদপ্রকাশ করা হয়েছে সরেজমিন তদন্তে কথা হয় সেই কড়ইতলা বাজার কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ কর্মী ফারুকের সাথে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ন আন্দোলন করছি এবং সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তা চালিয়ে যাবো। তাতে যে বাধাই আসুক না কেনো পিছিয়ে যেতে রাজি নই। ফারুককে সমর্থন করে বাজারে উপস্থিত এক ওয়ার্ড আওয়ামীগ সভাপতি, শিক্ষকসহ সকলেই এক বাক্যে রাজাকার মুজাহিদ ও তার বাবার নামে বাজারসহ রাস্তা নামকরনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহনের দাবী জানান।
মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন