আজঃ বৃহস্পতিবার ● ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১ ● ২রা মে ২০২৪ ● ২২শে শাওয়াল ১৪৪৫ ● দুপুর ১২:৫৯
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

সাংবাদিককে আওয়ামীলীগ অফিসে আটকিয়ে পেটালো বলে অভিযোগ

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্কঃ বরিশালের মুলাদীতে আঞ্চলিক ‘দৈনিক আজকের পরিবর্তন’-এর হিজলা প্রতিনিধি মো. সেলিম রাড়িকে মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আটকে রেখে মারধরে অভিযোগ উঠেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার একটি ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে মুঠোফোনে এসব তথ‌্য জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক মো. সেলিম রাড়ি।

তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তিনি এক ঘনিষ্টজনকে সঙ্গে করে হিজলা থেকে মোটরসাইকেলে করে মুলাদী হয়ে বরিশাল যাচ্ছিলেন। দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে মোটরসাইকেলটি মুলাদী সিনেমা হল মোড় অতিক্রমকালে সেখানে জানজটের কবলে পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন একটি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগ্নে।

সেসময় সেলিমের সঙ্গে থাকা আলমগীর মুঠোফোনে দুর্ঘটনার ছবি তোলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপজেলা চেয়ারম্যান মিঠু। ছবি তোলার অপরাধে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন তিনি। আচমকা আলমগীরের হাত থেকে ফোনসেটটি ছিনিয়ে নিয়ে পাশ্ববর্তী নদীতে ছুড়ে ফেলেন চেয়ারম্যান মিঠু।

বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক খোকন তালুকদার এবং উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি সুমন রাড়িকে জানান সেলিম। সুমন রাড়ি সন্ধ্যায় এ বিষয়ে একটি সুরহা করার আশ্বাস দেন। সহকর্মীদের জানানোর কারণে দ্বিতীয় দফায় তাদেরকে গালাগাল করেন চেয়ারম্যান মিঠু।

সন্ধ্যায় মুলাদীর সাংবাদিক খোকন তালুকদারকে সঙ্গে করে উপজেলা সদরের কলেজ রোডের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যান সেলিম। তাদেরকে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন উেপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠু। সেলিমের কাছ থেকে তার মোটরসাইকেলের চাবি, ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং দুটি মুঠোফোন সেট কেড়ে নেয় মিঠুর কর্মীরা।

খবর পেয়ে হিজলা উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি দেলোয়ার হোসেনও সেখানে হাজির হন। ইতোমধ্যে সেলিমের মুঠোফোনের কললিস্ট চেক করেন মিঠু। কললিস্টে বরিশাল সদরের সাংবাদিকদের নাম থাকায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন মিঠু। চেয়ারম্যানের উত্তেজনা দেখে তার কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে সেলিমকে বেদম মারধর করে। পরে তার মোটরসাইকেলের চাবি, ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং মুঠোফোন সেট দুটি ফেরত দেয়। তবে দুপুরে নদীতে ফেলে দেওয়া ফোন সেটের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। সেসময় ঘটনা কাউকে জানালে বা কোনো গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সেলিমকে এলাকা ছাড়া করাসহ হত্যার হুমকি দেয় মিঠুর কর্মীরা।

সেলিম জানান, এ ঘটনায় তিনি আইনগত বিচার চান। কিন্তু হিজলা থেকে মুলাদীতে গিয়ে থানায় অভিযোগ করার মতো পরিস্থিতি নেই।

হিজলা উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যাওয়ার পর আমার সামনেই সেলিমকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার কর্মীরা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায়ে কর্মীরা সেলিমকে বেদম মারধর করে। সেখানে থাকার মতো পরিস্থিতি না থাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বের হয়ে যাই আমি।’

এ বিষয়ে জানতে মুলাদী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সসম্পাদক তারিকুল হাসান খান মিঠুকে মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে মোবাইলে জানান তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার কানে আসেনি। যদি তেমন কিছু ঘটে, তাহলে সেটি দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্খিত। নির্যাতনের শিকার হলে যে কেউ আইনের আশ্রয় নিতে পারে। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক সেলিম মঙ্গলবার দুপুরে ফোন করে চেয়ারম্যান মিঠু তাকে গালাগালাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। তবে সন্ধ্যায় মারধরের বিষয়ে তাকে কিছু জানাননি। মুলাদী থানায় লিখিত অভিযোগ করলে অভিযুক্ত যেই হোক, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র-রাইজিং বিডি

মুবার্তা/এস/ই

 

ফেসবুকে লাইক দিন