By মুক্তি বার্তা
প্রকাশ্যে নারীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করার অভিযোগ
নিউজ ডেস্কঃ প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল মোল্লার বিরুদ্ধে। আহত ওই নারীর নাম রোজিনা আক্তার।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের মনিকা সাতক্ষীরা দধিঘরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের রোজিনা আক্তার একটি কাজে তালতলী উপজেলা শহরে আসেন। ওই শহরের বাঁধঘাট চৌরাস্তায় মনিকা সাতক্ষীরা দধিঘরে বসে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার পরিচিত জলিল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে দধি খাচ্ছিলেন।
এ সময় তালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল মোল্লার সহযোগী শ্রী সাগর ও সাগর মিয়া এসে মোবাইলে তাদের ছবি ধারণ করেন। ওই সময়ে রোজিনা তাদের ছবি তুলতে নিষেধ করলে ক্ষেপে যান সাগর ও তার আরেক সহযোগী সাগর মিয়া।
একপর্যায় তারা ওই নারীকে দধিঘরে বসে মারধর শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পরই যুবলীগ নেতা কামাল মোল্লা এসে ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসেন এবং রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারধর করেন।
নারীর চিৎকারের শত শত লোক এসে জমা হয়। তবে ভয়ে কেউ ওই নারীকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। ওই নারীকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে চলে যান যুবলীগ নেতা।
পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে স্থানীয় একজনের সহযোগিতায় ওই নারী থানায় যান।
এ ঘটনায় ওই রাতেই রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে তালতলী থানায় শ্রী সাগরকে প্রধান আসামি করে যুবলীগ নেতা কামাল মোল্লাসহ তিনজনের নামে মামলা করেন।
পুলিশ প্রধান আসামি সাগরকে গ্রেফতার করেছে। ওই নারীকে রাতে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আহত ওই নারীর আত্মীয় জলিল বলেন, আমি আর রোজিনা আপা সাতক্ষীরা দধিঘরে বসে দধি খাচ্ছিলাম। এ সময় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল মোল্লার পক্ষের শ্রী সাগর ও সাগর মিয়া নামের দুই বখাটে এসে আমাদের ছবি তুলছিল। তাদের ছবি তুলতে রোজিনা নিষেধ করলেই তারা আপার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর শুরু করে।
এর কিছুক্ষণ পরই কামাল মোল্লা এসে রোজিনা আপাকে টেনেহিঁচড়ে বাস্তায় নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। শত শত লোক দাঁড়িয়ে দেখলেও যুবলীগ নেতার ভয়ে কেউ তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।
আহত রোজিনা বলেন, আমি আর আমার এক পরিচিত জলিল মিয়া মনিরা সাতক্ষীরা দধিঘরে বসে দধি খাচ্ছিলাম। এমন মুহূর্তে দুটি ছেলে এসে আমাদের ছবি তুলছিল। আমি এর প্রতিবাদ করলেই আমাকে মারধর শুরু করে। কিছুক্ষণ পর কামাল মোল্লা এসে আমাকে ওই ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে নাস্তায় নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
আমি বহু অনুনয় বিনয় করেও কামাল মোল্লার মন গলাতে পারিনি। আমি কি অপরাধ করেছি জানি না। আমি এ ঘটনার দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
তালতলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল মোল্লা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছে।
তবে দুই সাগরের পক্ষ অবলম্বন করে তিনি বলেন, এক সাগরের হাতে ব্যান্ডেজ সে কীভাবে ওই নারীকে মারধর করল?
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা যুবলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, এ বিষয়টি আমি জানি না। অভিযোগ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার দলের কেউ বদনাম করবে; এমন কারও দলে জায়গা হবে না।
তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রধান আসামি শ্রী সাগরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান ওসি।
মুবার্তা/এস/ই