By মুক্তি বার্তা
অপরাধী ঠিকই শাস্তি পাবে। সেই ব্যবস্থা করবো- শেখ হাসিনা
নিউজ ডেস্কঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার পেছনের কারণ উদঘাটনের সঙ্গে হামলায় মদদদাতাদেরও খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, এমনটায় ব্যক্ত করলেন শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির এমপি হারুনূর রশিদের সম্পূরক প্রশ্নে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ইউএনওর যেই ঘটনা ঘটে গেছে সেটা কিন্তু তদন্ত করে দোষীদের কিন্তু গ্রেফতার করাও হয়েছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং বিষয়টা কি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু কিছু লোক বলছে যে চুরি করার জন্য…। এটি শুধু চুরি না, এরসঙ্গে আরো কি কি ঘটনা থাকতে পারে সেগুলোও কিন্তু যথাযথভাবে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা- আমি অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে দেখি। সেখানে যদি আমার দলেরও লোক হয়, সমর্থক হয় তাকেও আমি ছাড়ি না, ছাড়বো না- এটা হলো আমার নীতি। সেই নীতি নিয়ে আমি চলছি। এরইমধ্যে যারা ধরা পড়েছে, তাদের তদন্ত করা হচ্ছে। পাশপাশি আরো তদন্ত করা হচ্ছে যে এই ঘটনার মূলে কি আছে? কেন এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটলো?
করোনাভাইরাস মোকাবিলাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে তাদেরকে এভাবে আঘাত করে এটা তো কখনো গ্রহণযোগ্য না। এরইমধ্যে অপরাধী শনাক্ত করা বা তাদেরকে ধরা হয়েছে এবং এর পেছনে তাদের সঙ্গে আরো কারা কারা আছে, কাদের মদদে করেছে, সেটাও কিন্তু তদন্ত করা হচ্ছে। এটা খুব ভালোভাবেই তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে কোনো ঘাটতি নেই এবং ঘাটতি হবে না। অপরাধী ঠিকই শাস্তি পাবে। সেই ব্যবস্থা করবো, অন্তত এইটুকু আমি বলতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের কেউ যেন, এমনকি আপনারাও যারা এমপি আছেন, তাদের কাছেও অনুরোধ থাকবে, এ ধরনের অপরাধীদের কখনো রক্ষা করার চেষ্টা না করেন। অপরাধ যে করে আর অপরাধীকে যে রক্ষা করে, সমানভাবেই তারা দোষী।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতাকে পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ হত্যা ও পরবর্তী সরকারের খুনিদের রক্ষার চেষ্টার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, একটা কথা আপনারা জানেন বাংলাদেশে কী ঘটনাটা না ঘটেছে? পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট তো ঘরে ঢুকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তখন তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তার গোটা পরিবারকেই হত্যা করা হয়েছে। সেই খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। সেই খুনি ক্রিমিনালকে যখন প্রশ্রয় দেয়া হয়, মানসিকভাবে সেই দেশের মানুষের কী রকম চরিত্র হতে পারে? সেটাই হচ্ছে বিবেচ্য বিষয়। সেখান থেকে একটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা, ডিসিপ্লিনে নিয়ে আসা এবং অন্যায়কারীদের যেন শাস্তি হয়, বিচার হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া, এটা সব থেকে বড় কাজ। ঘটনা যেকোনো সময়ে ঘটতে পারে। কিন্তু সেই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি কিনা, সেটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।
তিনি বলেন, যে দেশে খুনিদের পুরস্কৃত করা হয় দূতাবাসে চাকরি দিয়ে, যে দেশে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে- এমন অবস্থা ছিলো, সেই দেশটাকে ডিসিপ্লিনে ফিরিয়ে আনা, সেই দেশকে নিয়ন্ত্রণে এনে নিয়মমাফিক চলানো খুব কঠিন একটা দায়িত্ব। সেই দায়িত্বটা তো আমরা সরকারে আসার পর পালন করে যাচ্ছি।
‘যেখানে ৫০০টা বোমা হামলা হয়েছে, প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী-অস্ত্রধারীরা অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে। এই ধরনের বহু ঘটনা তো আমাদের দেশে ছিলো। কিন্তু সেগুলো আমরা আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। তারপর এত জনসংখ্যা, এত ঘনবসতির একটি দেশে খুব কঠিন একটা কাজ। তারপরও কিন্তু আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা যথেষ্ট সক্রিয় আছে। যখনই যে ঘটনা ঘটেছে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই।’
মুবার্তা/এস/ই