By মুক্তি বার্তা
বিয়ের চার মাস পরে নববধু নিখোঁজ, সন্ধান মেলেনি ১০ দিনেও
নিউজ ডেস্কঃ বিয়ের ৪ মাসের মাথায় স্বামীর বাড়ি হতে নিখোঁজ হন নববধু মোছাঃ রেহেনা বেগম (২৮)। ১০দিন অতিবাহিত হলেও সন্ধান মিলেনি তার। এনিয়ে রেহেনার বাবা মোঃ হাছেন আলী গত ২রা সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কাজিরহাট বানীনগর গ্রামের দিনমজুর মোঃ হাছেন আলীর কন্যা মোছাঃ রেহেনা বেগম একজন গার্মেন্টস কর্মী। করোনার কারনে তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে সে বেকার হয়ে পড়ে। তাই গ্রামের বাড়ি বাবা মায়ের সংসারে ফিরে আসে।
রেহেনার বিয়ে হয় চলতি বছরের ২১শে মে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলি গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেরের পুত্র মোঃ হাদিউল ইসলাম (৪২) এর সঙ্গে।
হাদিউল দীর্ঘদিন সৌদি আরবে গৃহ নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে তিন বছর আগে দেশে ফিরেছে। সে পূর্বের দুই স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছে। রেহেনা তার তৃতীয় স্ত্রী।
হাদিউলের আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখে অভাবি পিতা তার ‘সুন্দরী’ মেয়েকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে দিতে রাজি হয়। উভয় পরিবারের স্বজনদের সিদ্ধান্তে বিয়ে হয়।
চলতি মাসের ২ তারিখে নববধু রেহেনা বেগম স্বামীর বাড়ি হতে নিখোঁজ হয়। এই নিখোঁজের খবরটি স্বামীর পরিবার চেপে রাখে। দুইদিন রেহেনার পরিবারকে জানানো হয়নি।
প্রতিদিন মা-বাবার সঙ্গে রেহেনার মোবাইলে কথা হতো। কিন্তু, দুই দিন ধরে কোন ফোন ধরেনা বা নিজেও ফোন করেনা। তাই, খোঁজ নিতে রেহেনার ভাই জহুরুল বোনের স্বামীর বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারে তার বোন দুইদিন ধরে নিখোঁজ।
রেহেনার বাবা মা ও পরিবারের স্বজনরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নেয়। মেয়ের সন্ধান না পেয়ে তার বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু, ১০দিনেও কোন রকম ‘ক্লু ’উদ্ঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন গৃহবধু নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এসআই সাইদুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি নিজেও বিষয়টি নিয়ে তৎপর রয়েছেন।
এ ব্যাপারে এস.আই সাইদুর রহমান জানান, গৃহবধুর বাবার অভিযোগটি আমার কাছে আছে। নিখোঁজ গৃহবধু রেহেনার স্বামীর বাড়িতে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি মোবাইল নম্বর রেহেনার স্বামী দিয়েছে। তার দাবি রেহেনা নিখোঁজের আগে এই নম্বরে কথা বলেছে। এই ফোন নম্বরটি ট্যাকিং করে দেখা হবে। সেখানে রেহেনা নিখোঁজের কোন সূত্র পাওয়া যায় কিনা।
রেহেনার স্বামীর বাড়ি দুহুলী গ্রামে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা হয়। এসময় রেহেনার স্বামী হাদিউলসহ বাড়ির অন্যরা জানান, নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন স্বামীর মোবাইল দিয়ে সকাল ৬ টা ৭ মিনিটে রেহেনা ১২ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড কথা বলে। এ সময় স্বামী হাদিউল ফোন করা দেখে ফেলে। স্বামী সন্দেহ প্রবণ হয়ে রেহেনার হাত থেকে মোবাইলটি কেড়ে নেয়। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে উত্তেজনামূলক কথাবার্তা হয়।
ওই নম্বরে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি একজন রাজমিস্ত্রি বলে জানান। রেহেনার সঙ্গে তার পরিচয় ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরী করার সময়। রেহেনা তার কাছে যায়নি বা রেহেনার সঙ্গে তার এমন কোন প্রেমঘটিত সর্ম্পক ছিলনা। ১২ মিনিট কথা বলার বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে স্বীকার করেছেন। তিনি এও বলেছেন, রেহেনা তাকে ছোটভাই হিসাবে মানতেন। তিনিও করোনার কারনে ঈদুল ফিতরের আগে বগুড়ার শিবগঞ্জে তার বাড়িতে চলে আসে। তখন থেকে সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে বলে জানান। তিনি আরো জানান, সে আর কোনদিন ফোন দিবেনা বলেছিলো।
মুবার্তা/এস/ই