By মুক্তি বার্তা
চৌগাছায় চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন শিম ক্ষেত পরিচর্যায়
চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় আগাম শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। নতুন শিম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। দাম পেয়ে খুশি তারা। মাঠের পর মাঠ শিমের ফুলে ফুলে ভরে গেছে। চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন শিম ক্ষেত পরিচর্যায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় চাষিরা অন্যান্য সবজির পাশাপাশি আগাম শিম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। চাষিরা জানান, শিম শীতকালীন ফসল হলেও আর্থিক লাভবান হবার আশায় ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ নিয়ে আগাম শিম চাষ শুরু করেছি।
চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য কর্মকর্মা তরিকুল ইসলাম জানান, এ বছর ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে রুপভান, ইপসা-১, কাকিলা, সোনামুখি, রোপালীসহ বিভিন্ন জাতের শিম আগাম চাষ হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
কুটালীপুর গ্রামের শিম চাষি মহসিন আলী জানান, এক বিঘা জমি শিম চাষে ১৮/২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘায় শিম উৎপাদন হয় ৪০/৪৫ মন। গড় ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রী করলেও শিম চাষ করে বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব।
বিশেষ করে উপজেলার হাজরাখানা, পেটভরা, চাঁদপাড়া, বুন্দেলীতলা, বাদেখানপুর, বড়খানপুর, হোগলডাঙ্গা, সিংহঝুলি, সুখপুকুরিয়া, রসুলপুর, জাহাঙ্গীরপুর, জগদীশপুর, মির্জাপুর, ইছাপুর, কান্দি, আড়কান্দি, আন্দারকোটা, চারাবাড়ী, পাতিবিলা, হিজলী, সৈয়দপুর, জামালতা গ্রামে ধান পাটের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে শিম চাষ করছেন চাষিরা।
জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শিম চাষি আব্দুস শুকুর জানান, আমাদের এলাকা তুলনা মুলক নিচু হওয়ায় ধানের আবাদ বেশী হয়। তবে জমিতে মাটির বেড তৈরী করে আগাম শিম চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। ইতি মধ্যে ৫ কাটা জমি থেকে ১৩ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। এ জমি থেকে শিম বিক্রি করে গত বছর ৪০ হাজার টাকা লাভ করেছিলাম।
কথা হয় চৌগাছা বাজারে শিম বিক্রি করতে আসা বর্ণি গ্রামের শিম চাষি আলতাফ হোসেন ও শাহিনুর রহমান বলেন, আগাম শিম চাষে ঝুঁকে পড়েছে এ এলাকার চাষিরা। কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে শীতের আগাম সবজি শিম চাষ করেছি। বর্তমানে ক্ষেত থেকে শিম উঠা শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে এক কেজি লাল শিম ১শ’ ২০ টাকা ও সাদা শিম ১শ’ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাজরাখান গ্রামের শিম চাষি রব্বানী জানান বালিরভাগ বেশি হওয়ার কারণে এক সময় আমাদের মঠে কোনো ফসল হতো না। ফলে সারা বছর শত শত বিঘা জামি পড়ে থাকত। যেখানে শীতকালে শিয়ালে গর্ত করে বসবাস করতো। বর্তমানে আগাম শিম চাষ করায় এখানকার জমিতে সোনা ফলে। দশ বছর আগেও এখানে এক বিঘা জমির মূল্য ছিল খুবজোর ৫০-৬০ হাজার টাকা। এখন এক বিঘা জমির মূল্য ৪-৫ লাখ টাকা।
পেটভরা গ্রামের কৃষক আব্দুল মাজিদ জানান, ৫-৬ বছর ধরে এ এলাকার কৃষকরা আগাম শিম চাষ শুরু করেন। ফলন ও দাম ভালো পেলে শিম চাষে আরো মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, শিম সাধারণত শীত মওসুমের ফসল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা এ চাষে বড় অন্তরায় হলেও ঝুঁকি নিয়ে আগাম শিম চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া শিম চাষ শেষ করে একই জমিতে গোল-আলু, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, পুইশাকসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করতে পারছে চাষিরা। এতে জমির ব্যবহার বাড়ছে এবং চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
মুবার্তা/এস/ই