By মুক্তি বার্তা
চৌগাছায় শিক্ষকদের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হলো শিশু শিক্ষার্থী তাহসিন
নিউজ ডেস্কঃ যশোরের চৌগাছায় বন্ধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অফিসার আসবে বলে স্কুলে আসতে বলা হয় শিশু শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকের নির্দেশে স্কুলে যাবার পথে নিজের বাড়ির সামনেই একটি ইজিবাইকের ধাকায় প্রাণ হারিয়েছে পিতাহারা শিশু শিক্ষার্থী তাহসিন (৬)। তাহসিন উপজেলার আড়ারদহ-নিমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ফুলসারা ডাক্তার পাড়া গ্রামের মৃত শরফুদ্দিনের ছেলে।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ফুলসারা ডাক্তারপাড়া জিয়া মেম্বারের বাড়ির সামনের সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতের চাচাতো ভাই চৌগাছা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, তাহসিনের স্কুলের স্যারেরা বলেছিল স্কুলে অফিসার আসবে। সবাইকে স্কুলে যেতে হবে। স্যারদের সেই নির্দেশে সে সকালে স্কুলে যাচ্ছিল। এসময় বাড়ি থেকে বের হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান ঢালীর বাড়ির সামনে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি ইজিবাইক তাকে ধাক্কা দিলে মারাত্মক আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির বাবা তিন বছর আগে ঝাড় থেকে বাঁশ কাটতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
পরে তার ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ লাশ থানায় নেয়। কিন্তু ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ দাফনের জন্য অনুমতি দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চৌগাছা থানার এসআই আতিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ইজিবাইকের চালককে আটক করা হয়নি। শিশুটির পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, করোনার সময়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্ত উপজেলাব্যাপী স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগসাজস করে দায়িত্বপ্রাপ্ত এনজিও শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে এসে বিস্কুট প্রদান করছে। আবার বিস্কুট প্রদানের সাথে জড়িত এনজিও কর্মীদের শিক্ষকরা বিস্কুটের অফিসার বলে সম্বোধন করেন। শিক্ষার্থীদের হয়ত বিস্কুটের অফিসারের কথা বলেই স্কুলে আসতে বলা হয়েছিল।
স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের স্কুলে ডাকা হয়েছে কেন জানতে চাইলে আড়ারদহ-নিমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেলী আক্তার বলেন, স্কুলে ডাকা হয়নি। অফিসার আসবে বলে বাচ্চাদের স্কুলে আসতে বলা হয়নি? তিনি বলেন আজকে কোন অফিসার আসবেন না। তাহলে আপনারা এখন স্কুলে অবস্থান করছেন কেন জানতে চাইলে তিনি ইতস্ততো ভঙ্গিমায় বলেন, প্রতি বুধবারে অফিসিয়াল কাজের জন্য আমরা স্কুলে অবস্থান করি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজকে কোন অফিসার ওই স্কুলে যাবে বলে আমার জানা নেই।
পরবর্তীতে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি এখনি ওই স্কুলে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বন্ধের সময়ে শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট দেয়ার কথা রয়েছে সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মীদের।
মুবার্তা/এস/ই