By মুক্তি বার্তা
সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত অধিবাসীদের শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন নীলকুঠিতে নিয়োগ
সাজেদ রহমানঃ যশোর অঞ্চলে নীল চাষ করতে স্থানীয় লোকজন অনাগ্রহ প্রকাশ করলে চতুর নীলকররা ভারতের বিহার প্রদেশের ছোট নাগপুর হতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত অধিবাসীদের আমদানী করে শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন নীলকুঠিতে নিয়োগ দিত।
এই সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত লোকেরা দু’টি শ্রেণীতে বিভক্ত। একশ্রেণী বুনো ও অপরশ্রেণী বাগদী নামে পরিচিত। যেখানে যেখানে নীলকুঠি ছিল সেখানেই এই বুনো ও বাগদীদের বসতি লক্ষ্য করা যায়। বুনোদের প্রিয় খাদ্য ছিলো বাদুড়। গভীর রাত পর্যন্ত জাল পেতে বসে থেকে বাদুড় ধরা এবং পরিবারের সবাই মিলিত হয়ে অতি আনন্দের সাথে আহার করা এদের পারিবারিক জীবনের অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এছাড়া সজারু, কাছিমও এদের পছন্দের খাবার ছিলো। মেয়ে-পুরুষ দিনভর কাজ করে সন্ধ্যায় বাজার-সদাই করে বাড়ী ফিরতো।
বাঙালি হিন্দুদের মত আচার-আচরণ করলেও সামাজিক ও কর্মপদ্ধতির দিক থেকে হিন্দুর সাথে এদের বেশ পার্থক্য আছে। এদের মেয়েদের বিবাহ ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাড়তি আচার-অনুষ্ঠান আছে। বিবাহে যৌতুক দেয়া-নেয়াও বিদ্যমান। বুনোরা দীর্ঘদিন ধরে এদেশে বসবাস করলেও এদের আচার-আচরণ, হাল-চাল, সামাজিক কর্মপদ্ধতি, উচ্চারণভঙ্গী ও জীবনযাত্রার বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করে যে এরা স্থানীয় নয়, এরা আমদানীকৃত। অর্থনৈতিক কারণে এদের অনেকে নিজস্ব পেশা ছেড়ে অন্যান্য কাজ নিয়েছে। প্রতিদিন এদের এক অংশ ভোরে বেরিয়ে পড়ে নদী, খাল-বিলের দিকে এবং অপর অংশ কোদাল ও কুড়াল কাঁধে করে ছুটে মাছ ও কাজের সন্ধানে। এভাবে জীবনযাপন করে আসছে তারা যুগ যুগ ধরে। ছবি চৌগাছার পুড়োপাড়ার দক্ষিণে চুটাহুদা থেকে তোলা।
মুবার্তা/এস/ই