আজঃ শনিবার ● ১৮ই কার্তিক ১৪৩১ ● ২রা নভেম্বর ২০২৪ ● ২৯শে রবিউস-সানি ১৪৪৬ ● বিকাল ৫:০৪
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

পাঁচবার নোবেল পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম মনোনীত হয়েছিল….

ফাইল ছবি

সাজেদ রহমানঃ ছোটোবেলায় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল ‘মেঘনাথ’, যার অর্থ দেবরাজ ইন্দ্র। হিন্দু সমাজের গোঁড়ামি এবং জাতপাত বিভাজনের শিকার তাঁকে বারবার হতে হয়েছে। তাই বিরক্ত হয়ে নিজের নাম পাল্টে রাখলেন ‘মেঘনাদ’। অর্থাৎ রাক্ষসদের রাজা রাবণের পরাক্রমশালী ছেলে ইন্দ্রজিৎ। লঙ্কার রাজপুত্রকে তিনি মনে করতেন সমাজের লাঞ্ছিত পিছিয়ে থাকা অংশের প্রতিনিধি।

বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার জন্ম হয় ১৮৯৩ সালে পূর্ববঙ্গের শেওড়াতলি গ্রামে। বাবা জগন্নাথ সাহা ছিলেন পেশায় মুদি। দরিদ্র পরিবার। মেঘনাদ যখন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে পড়তেন, তখন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন চলছে।

গভর্নর বামফিল্ড ফুলার তাঁদের স্কুল পরিদর্শনে গেলে মেঘনাদ ও অন্যান্য পড়ুয়ারা বয়কট আন্দোলন করেন। বাকি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মেঘনাদকেও স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয় এবং নামঞ্জুর করা হয় তাঁর বৃত্তি। কিশোরীলাল জুবিলি হাইস্কুলে তিনি বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ পান। ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করার পর মেঘনাদ সাহা ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৯১৫ সালে ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন ডক্টরেট অফ সায়েন্স ডিগ্রি। ইউরোপের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে তিনি গবেষণা করেছেন। অধ্যাপক হিসেবে তিনি ছিলেন ছাত্রদের খুব প্রিয়। স্বদেশি বিপ্লবী আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন।

১৯২০ সালে তাপীয় আয়নায়ন নিয়ে মেঘনাদ সাহার গবেষণাপত্র প্রকাশিত হলে তাঁর খ্যাতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে যুগান্ত এনেছিল সেই গবেষণা। মেঘনাদ সাহার প্রধান আগ্রহ ছিল জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের এখনও পথ দেখায় তাঁর গবেষণা। পাঁচ বার মেঘনাদ সাহার নাম মনোনীত হয়েছিল নোবেল পুরস্কারের জন্য। কিন্তু প্রত্যেক বারই শেষ পর্যায়ে নোবেল কমিটি বাদ দেয় তাঁর নাম।

১৯৫৬ সালে এই মহান বিজ্ঞানী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন মেঘনাদ সাহা। পাশাপাশি, তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন