আজঃ মঙ্গলবার ● ১লা মাঘ ১৪৩১ ● ১৪ই জানুয়ারি ২০২৫ ● ১৩ই রজব ১৪৪৬ ● সকাল ১১:৪৮
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে অভিযান ফ্লপ: চলছে ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব !

ফাইল ছবি

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্ধ্যা ও এর শাখা নদীতে ‘ডিমওয়ালা’ মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছে। রাত-দিন জেলেরা সন্ধ্যা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মা ইলিশ নিধনে মেতে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে মৎস্য দপ্তরের রহস্যজনক নির্লিপ্ততা ও লোক দেখানো  দায়সারা অভিযানের কারনে এ নিধনযজ্ঞ চলছে। ফলে অভিযান সফল না হয়ে ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হচ্ছে।  অভিযানে থাকা সদস্যদের বিরুদ্ধেও ইলিশ নিধনে অংশ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার রাতে সন্ধ্যা নদীতে মা ইলিশ নিধন বন্ধে উপজেলা মৎস্য দপ্তরের অভিযানে অংশ গ্রহণ করা শ্রমিক রেজাউল’র বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আটক ও ফ্রিজ থেকে ১২ কেজি মা ইলিশ জব্দ করে তাকে ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বানারীপাড়া পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডে এসকেন্দার মোল্লার বাসার ভাড়াটিয়া ও পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. তোতা মিয়ার ছেলে ট্রলার শ্রমিক রেজাউল’র বাসায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো.মফিজুর রহমান ১৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আটক ও ১২ কেজি মা ইলিশ জব্দ করেন। এসময় রেজাউল সন্ধ্যা নদীতে উপজেলা মৎস্য দপ্তরের অভিযানের  সদস্য হিসেবে ট্রলারে থাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.মফিজুর রহমান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুলিশকে জানিয়ে সেখানেই তাকে আটক করান। পরে তাকে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করা হয়।

সোমবার সকালে তাকে বরিশাল কারাগারে পাঠানো হয় বলে থানার অফিসার ইনচার্জ মো.হেলাল উদ্দিন জানান।  জাল ও ইলিশসহ রেজাউলকে আটকের মধ্য দিয়ে ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।  প্রসঙ্গত ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা নদীতে মৎস্য অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলা মৎস্য দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এপর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালত ৫০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার ও ১৭ জন জেলেকে আটক করে জেল-জরিমানা করার পাশাপাশি ৯০ কেজি মা ইলিশ জব্দ এবং ১টি ট্রলার আটক করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.জামাল হোসাইন  বলেন,সরকারের সীমিত বরাদ্ধ দিয়ে বিশাল এলাকা জুড়ে নদীতে অভিযান চালিয়ে  শতভাগ মা ইলিশ নিধন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তারপরেও দিন রাত নদীতে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, মৎস্য অভিযান শুরু হওয়ার পূর্বেই অভিযান সফল করার ব্যাপারে নদীর তীরবর্তী চাখার,সৈয়দকাঠি ও বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের জেলে ও জনপ্রতিনিধিসহ সুধীজনদের নিয়ে সচেতনতামূলক পৃথক তিনটি সভা করা হয়েছে। ওই সভাগুলোতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জেলেদের পুনর্বাসনে  সরকারিভাবে চালও বিতরণ করা হয়েছে। তারপরেও চোখ ফাঁকি দিয়ে নানা কৌশলে ইলিশ শিকার করছে একটি অসাধূ চক্র। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।  উল্লেখ্য গত বছর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধন বন্ধে নিজেই অভিযানে নামেন। রাত-দিন একাকার করে  তিনি দিনের পর দিন অভিযানের নেতৃত্ব দেন। ফলে অভিযানে সফলতা আসে।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন