আজঃ বৃহস্পতিবার ● ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১ ● ২রা মে ২০২৪ ● ২২শে শাওয়াল ১৪৪৫ ● সকাল ১১:২৩
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

আবুল হাসান বাহিনীর অস্ত্রের তাণ্ডবে আতঙ্কিত এলাকাবাসী

আবুল হাসান বাহিনীর তাণ্ডব

‎সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় আবুল হাসান বাহিনীর তাণ্ডবে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। তার সন্ত্রাসী বাহিনী একের পর এক তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। রোববার (২ আগস্ট) বিকেলে তার বাহিনী উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা গেছে। তাদের গুলিবর্ষণের শব্দে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি এবং কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও বিক্রি করে আসছে আওয়ামী লীগ কর্মী আবুল হাসান বাহিনী। তারা বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয় ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি ও মামলা রয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়েছে পড়েছেন।

গেল বছরের ৬ ডিসেম্বর স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালেহ আহমদ ছোট মিয়া মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগে জগন্নাথপুর থানায় জিডি করেন। এ সংবাদ জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পূর্বপশ্চিম’র সিলেট প্রতিনিধি মো. মুন্না মিয়াকে হত্যার হুমকি দেয় হাসান বাহিনীর ক্যাডাররা। তখন তিনি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করেন। ইতিমধ্যে হাসান বাহিনীর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাংবাদিক মুন্নার করা জিডির প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে জিডি করায় আরও ক্ষিপ্ত হয় হাসানের সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা গত ২৪ জানুয়ারি সাংবাদিক মুন্নাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এবং আহত করে। তিনি জগন্নাথপুর থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ মামলা নেয় নি।

পরবর্তী কোর্টে মামলা করেন সাংবাদিক মুন্না। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। এরজের ধরে হাসান বাহিনী ব্রিটিশ নাগরিক সালেহ আহমদ ছোট মিয়ার ক্ষতি সাধনের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ গত শনিবার (ঈদের দিন) হাসান বাহিনী ছোট মিয়ার ক্ষতি করতে এক বৈঠকে বসে। বৈঠকে ২৪ ঘণ্টায় ভেতরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ছোট মিয়াকে হত্যার নির্দেশ দেন হাসান বাহিনীর প্রধান বিতর্কিত সন্ত্রাসী আবুল হাসান। তার নির্দেশে রোববার (২ আগস্ট) বিকেলে সৈয়দপুরের ত্রাস হাসানের নেতৃত্বে সৈয়দপুর বাজারে অবস্থিত ছোট মিয়ার বাসা ও মার্কেট ঘেরাও করে রাখে তার ক্যাডার বাহিনী।

এসময় সন্ত্রাসী সৈয়দ সাইদুল হক, সাব্বির আহমদ, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী রুম্মান, জুম্মান, মিজান, জুম্মান জয়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসীদের দিনদুপুরে অস্ত্রের মহড়া এবং গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায়। যা জগন্নাথপুর উপজেলার প্রথম কোনো অস্ত্রের মহড়ার দৃশ্য। তাদের গুলিবর্ষণের আওয়াজ শুনে আতর্কিত হয়ে বাজারে থাকা লোকজন দৌঁড়ে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পৌঁছান।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারে নি বলে জানা গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র বা কাউকে আটক করতে পুলিশ পারে নি বলে এক প্রশ্নের জবাবে ওসি জানিয়েছেন। তবে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে ২৮ ডিসেম্বরে হওয়া জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার জন্য বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ এমএ মান্নান যথারীতি সৈয়দপুর বাজারে অবস্থান নিলে হাসান বাহিনী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে জনসভা পণ্ড করে পুলিশী পাহারায় সৈয়দপুর ত্যাগ করেন বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী।
সূত্রঃ পূর্ব পশ্চিম নিউজ

ফেসবুকে লাইক দিন