আজঃ শনিবার ● ৭ই বৈশাখ ১৪৩১ ● ২০শে এপ্রিল ২০২৪ ● ৯ই শাওয়াল ১৪৪৫ ● রাত ১:০৪
শিরোনাম

By: মুক্তি বার্তা

চৌগাছায় ১৮০ হেক্টর জমিতে হয়েছে শিম চাষ, বাম্পার ফলনের আশা 

ফাইল ছবি

চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় এবারের গ্রীস্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে হয়েছে শিম চাষ।  শিম শীতকালিন সবজি হিসেবে গ্রাম বাংলায় এমনকি শহরের মানুষের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। শীত মৌসুম শুরুর দিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে দাম বেশি থাকে। বেশি দামে শিম বিক্রির আশায় যশোরের চৌগাছার চাষিরা গ্রীস্মের শিম চাষে ঝুকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অধিকাংশ জমির প্রতিটি গাছ ফুলে ফুলে ভরে গেছে। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে শিম বিক্রি করে চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন।
শীত মৌসুম শুরুর আগে ভাগেই কৃষক ক্ষেত প্রস্তুত করে বপন করেন শিমের বীজ। পুরো শীতে শিম বিক্রি করে বেশ লাভবান হন। শীতের শিম এখন চাষ হচ্ছে গরমে। নতুন চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বি। শিমে অন্যান্য সবজির মত ভাইরাস নেই বললেই চলে। সব ধরনের মাটিতেই শিমের চাষ হয়। বাড়ির চালে, মাচায়, রাস্তা বা পুকুর পাড় এমনকি জমির আইলে শিম চাষ করা যায়। বাজারে শিমের চাহিদা ভাল দামও বেশি পাই, তাই গ্রীস্মের শিম চাষে ঝুকছেন এ জনপদের চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছাতে এবারের গ্রীস্ম মৌসুমে ১৮০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। রুপবান ও ইসপা-২ জাতের শিম বেশি চাষ হচ্ছে।
 উপজেলার সিংহঝুলী, ফুলসারা, নারায়নপুর, স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠে যেয়ে দেখা যায়, চাষিরা গ্রীস্মের শিম অত্যান্ত যত্ন সহকারে মাচায় চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমির শিমে ইতোমধ্যে ফুলে ভরে উঠেছে। আর সপ্তাহ দুয়েক পরেই কৃষক তার পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। কথা হয় পেটভরা গ্রামের শিম চাষি ইনতাদুল বিশ্বাসের সাথে। তিনি বলেন, শিম মুলত শীতের সবজি, কিন্তু গ্রীস্মেও এর চাষ হচ্ছে ফলনও আশানুরুপ তাই আগাম শিম চাষ করেছি। চলতি মৌসুমে তিনি ১ বিঘা জমিতে রুপবান জাতের শিমের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কোন দূর্যোগ দেখা না দিলে লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে মনে করছেন। তিনি বলেন গ্রীস্মের শিম চাষে পোকা মাকড়ের উপদ্রুপ কিছুটা বেশি থাকে, তবে নিয়মিত জমি পরিচর্জা করলে পোকায় শিম বেশি ক্ষতি করতে পারেনা। নিয়মিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করলে শিতের মতই শিম গাছের গ্রোথ খুবই ভাল থাকে। ওই মাঠে কৃষক ইনতাদুল বিশ্বাসের মত কৃষক আব্দুল মালেক ১ বিঘা, শহিদুল ইসলাম দেড় বিঘা, শফিকুল ইসলাম ১ বিঘা, সাইফুল ইসলাম ২ বিঘা, হাবিবুর রহমান ১ বিঘা, টিপু সুলতান ১ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন।
উপজেলার ফুলসারা ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের চাষিরা তুলনা মূলক নিচু জমিতে গ্রীস্মের শিম চাষ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। কৃষকরা যে সব জমিতে বছরের বেশির ভাগ সময় পনি জমে থাকে সেই জমিতে শিম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত ৬/৭ বছর ধরে চাষিরা নিচু জমিতে উঁচু বেড তৈরী করে সেই বেডে রোপন করেন শিমের বীজ। একাধারে বৃষ্টিপাত হলেও এসব জমির শিম নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে বলে কৃষকরা জানান।
উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চৌগাছার কৃষকরা বেশ পারদর্শি। অনেক আগে থেকেই এ অঞ্চলে গ্রীস্মের শিম চাষ হচ্ছে। কৃষক যাতে এ সব ফসল উৎপাদনে কোন সমস্যায় না পড়েন তার জন্য কৃষি অফিস সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন