আজঃ বুধবার ● ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১ ● ১লা মে ২০২৪ ● ২১শে শাওয়াল ১৪৪৫ ● সন্ধ্যা ৭:০৩
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

জনকন্ঠের সাবেক মফস্বল সম্পাদক দিলীপ দেবনাথকে নিয়ে অতীত স্মরণে

ফাইল ছবি

সাজেদ রহমানঃ দেখতে দেখতে ৭ বছর হয়ে গেল, দৈনিক জনকন্ঠের সাবেক মফস্বল সম্পাদক দিলীপ দেবনাথ পরলোক গমন করেছেন। ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট তিনি মারা যান। পত্রিকার মফস্বল বিভাগে কাজ করেন এমন পন্ডিত ব্যক্তি আমি আর দেখেনি। বাংলা লেখার ক্ষেত্রে ভাষা প্রয়োগে তাঁর মত দক্ষতা খুব কম মানুষই দেখেছি। কথা বলতেন মৃদু স্বরে। অনেক সময়, তাঁর কথা বুঝতে পারতাম না। আবার জিজ্ঞাসা করতাম।

দিলীপ দেবনাথের জন্ম ১৯৪০ সালের ১১ এপ্রিল। সার্টিফিকেটে লেখা হয় ১ জানুয়ারি ১৯৪২। তিনি বড় হয়েছিলেন নরসিংদীর পলাশ থানার পাইকসা গ্রামে। আজন্ম বোহিমিয়ান। বাবা চেয়েছিলেন ছেলেকে প্রকৌশলী বানাতে। আর তিনি নিজে হতে চেয়েছিলেন অর্থনীতির শিক্ষক। এর কোনটাই তিনি হতে পারেননি। সাত ঘাটের পানি খেয়ে শেষ পর্যন্ত হয়েছিলেন সাংবাদিক। এক সময় তিনি জড়িত ছিলেন বাম রাজনীতির সাথে।

জীবিকার প্রয়োজনে তিনি শিক্ষকতা করেছেন, ফুটপাতে গেঞ্জি বিক্রি করেছেন। কাপড়ের বোঝা কাঁধে নিয়ে ফ্লাটে ফ্লাটে ঘুরেছেন। টেক্সটাইল মিলে কেরানিগিরি করেছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারের। ঢাকা আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসাবেও কাজ করেছেন বেশ কিছুদিন। সাংবাদিকতায় তাঁর হাতেখড়ি দৈনিক বাংলায় (এখন লুপ্ত) নিজস্ব সংবাদদাতা হিসাবে। পরে ওই প্রতিষ্ঠানেই তিনি দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন রিপোর্টার ও সাবএডিটর হিসাবে। দৈনিক বাংলায় তাঁর সাড়া জাগানো সিরিজ রিপোর্ট ছিল ‘ভুলে ভরা বোর্ডেও বই’। ফিচার লিখেছেন অজস্র। লিখেছেন সাহিত্যের পাতায়ও। তাঁর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রচনা ‘শেক্সপিয়ারের ট্রাজেডি প্রসঙ্গ’ সিরিজটি।

দৈনিক বাংলা বন্ধ হয়ে গেলে, তিনি যোগদান করেন দৈনিক জনকন্ঠে। সেখানে তিনি মফস্বল সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। জনকন্ঠে তাঁর বিশেষ লেখা ছদ্মনামে প্রকাশিত সিরিজ ‘মৌলবাদের রক্তাক্ত থাবা’। জনকণ্ঠ ছেড়ে দিয়ে তিনি সাপ্তাহিক ২০০০ এ যোগদান করেন। সেখানে চাকরি ছেড়ে তিনি ভারতে নদীয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি পরিবারের সাথে বসবাস করছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘এভাবে বাংলা লিখুন’ ‘নাম নিয়ে নানা কথা’ এবং অনুবাদ গ্রন্থ ‘ইতিহাসের খেরোখাতা’ পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন