আজঃ রবিবার ● ১৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ● ১লা ডিসেম্বর ২০২৪ ● ২৮শে জমাদিউল-আউয়াল ১৪৪৬ ● দুপুর ১:৫৭
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

৩ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার আরতি আজ আইএএস অফিসার

৩ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার আরতি - ফাইল ছবি

সাজেদ রহমানঃ বিদ্রূপ, কটূক্তি জয় করে ৩ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার আরতি আজ আইএএস অফিসার। বয়সের মতো উচ্চতাও একটা সংখ্যা মাত্র। প্রমাণ করেছেন আরতি ডোগরা। এই মুহূর্তে দেশের যে আইএএস আধিকারিকরা খবরের শিরোনামে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম তিনি।

বাবা মায়ের সাথে আরতি

আরতির বাবা সেনাবাহিনীর কর্নেল। মা ছিলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা। শারীরিক দিক থেকে আরতি বাকি পাঁচ জন শিশুর মতো হবেন না, শৈশবেই বলে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। বলে দিয়েছিলেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে না তাঁর উচ্চতা। চিকিৎসকের কথা মতো উচ্চতা থেমে গিয়েছে ৩ ফুট ২ ইঞ্চিতেই। কিন্তু আরতির মেধাকে আটকে রাখা যায়নি। মেধার উচ্চতার আলোয় ঢাকা পড়ে গিয়েছে শারীরিক খর্বতা। একমাত্র সন্তানের এই শারীরিক অবস্থা দেখে আরতির বাবা মায়ের কাছে সহানুভূতি প্রকাশ করতেন আত্মীয় পরিজন এবং প্রতিবেশীরা। অনেকেই জিজ্ঞাসা করতেন আরতির মাকে, কবে দ্বিতীয় সন্তান আসবে তাঁদের পরিবারে? এই ধরনের কটাক্ষ, বিদ্রূপ যত শুনতেন, তত চোয়াল শক্ত হত আরতির মায়ের।
তিনি চেয়েছিলেন তাঁর মেয়ের মধ্যেও যেন এই দৃঢ়তা আসে।সেই স্বপ্ন সফল হয়েছিল আরতির মায়ের। ছোট থেকেই মেয়ের মধ্যে লড়াই করার শক্তি বপন করতে পেরেছিলেন তিনি। প্রথম প্রথম স্কুলের কটূক্তিতে কষ্ট পেতেন আরতি। কিন্তু পরে সেই কষ্টকেও জয় করে ফেললেন। স্কুলের পরে দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন আরতি। স্নাতকোত্তর করতে চলে যান দেহরাদূন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় আর এক আইএএস অফিসার মনীষার। আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু আরতির। এ বার তাঁর লক্ষ্য ইউপিএসসি পরীক্ষা। দাঁতে দাঁত চেপে শুরু হল প্রস্তুতি।

প্রাশাসনিক দায়িত্বরত আরতি

সাফল্য এল প্রথম প্রয়াসেই। ২০০৬-এ আইএএস অফিসার হন আরতি। ইতিমধ্যেই রাজস্থানের অজমেঢ়, বিকানের, জোধপুর এবং বুঁদির জেলাশাসক হয়ে কাজ করেছেন আরতি। একইসঙ্গে দক্ষ এবং জনপ্রিয় প্রশাসক হিসেবে পরিচিত তিনি।
বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটারদের বুথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন আরতি। তাঁর আমলে অজমেঢ়ে বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটারদের ভোটদানের ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। আরতির উদ্যোগে প্রশাসনের তরফে বহু সুযোগসুবিধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে রাজস্থানের প্রত্যন্ত অংশে আগের থেকে অনেক বেশি বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটাররা বুথমুখী হয়েছেন।

মানবতার মাঝে আরতি

কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে আরতি পুরস্কৃত হন। ২০১৯-এ জাতীয় ভোটার দিবসে আরতি পুরস্কার গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে। চেনা হিসেবের উলটপুরাণ হয়ে এ ভাবেই এগিয়ে যেতে চান তিনি।
মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন