By: মুক্তি বার্তা
চৌগাছায় ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে বিপুল পরিমান বালু জব্দ
চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছার বাওড় মৎস প্রকল্পের অধীন বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের ৪টি স্থানে ১২টি মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান মিয়া ওরফে কামারুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন।
যার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় একজন ইউপি সদস্যও। এ বিষয়ে ২১ আগস্ট স্থানীয় আরেকজন ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড তাদের বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। তবুও বালু উত্তোলন বন্ধ করেন নি তারা বরং জোর পূর্বক বালু উত্তোলন শুরু করেন। এতে বাওড় তীরবর্তী উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের আজমতপুর ও শাহাজাদপুর গ্রামের বশতবাড়ী, কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে। তাদের বালুবাহী ট্রাক ও ট্রাক্টরে কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকে। কৃষকরা তাদের নিষেধ করলে নানাভাবে হুমকী দেয়া হয়। এরপ্রেক্ষিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য দাউদ হোসেনসহ গ্রামের ১১৫ ব্যক্তি গণস্বাক্ষর করে যশোরের জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। সেই আবেদনের অনুলিপি ভূমি মন্ত্রণালয়, চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর কার্যালয় ও চৌগাছা থানার ওসিকে প্রদান করা হয়।
আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সোমবার দুপুর ২টার দিকে চৌগাছার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ণ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। তবে আদালত পরিচালনার সময়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত কাউকে ঘটনাস্থলে না পেয়ে আলাদাভাবে চারস্থানে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বিপুল পরিমান বালু জব্দ করেন আদালত। এসময় চারটি বালুর গাদায় (উত্তোলনের পর স্তুপ করে রাখা) লাল পতাকা উত্তোলন করে দেয়া হয়। আদালত পরিচালনাকালে সহাকারী কমিশনারের (এসিল্যান্ড) সাথে ছিলেন চৌগাছা থানার একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও একজন সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) নেতৃত্বে পুলিশ এবং আনছার বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, বালু উত্তোলনকারীদের ঘটনাস্থলে না পাওয়া যাওয়ায় স্তুপ করে রাখা চার স্থানের বিপুল পরিমান বালু জব্দ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এম. এনামুল হক বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পাশাপাশি গ্রামবাসী স্থানীয়ভাবেও লিখিত অভিযোগ দেন। সে প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান বালু জব্দ করা হয়েছে। তিনি জানান দ্রুতই এই বালু নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে।
এদিকে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত ফিরে যাওয়ার পরপরই ৪টি মেশিন অভিযুক্তরা খুলে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কামারুজ্জামান মিয়া ওরফে কামারুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি প্রথমে রিসিভ করেননি, পরে কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
মুবার্তা/এস/ই