আজঃ শনিবার ● ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১ ● ২৭শে এপ্রিল ২০২৪ ● ১৬ই শাওয়াল ১৪৪৫ ● ভোর ৫:২০
শিরোনাম

By: মুক্তি বার্তা

চৌগাছায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ভ্রম্যামান আদালতের অভিযানে বের হলো নতুন তথ্য

ফাইল ছবি

চৌগাছা প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের স্থানে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার দুপুর আনুমানিক ১টার পরে (১.৩০ মিনিট) উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বাটিকামারি মৌজার বেলের মাঠ নামক স্থানে এই অভিযান পরচিালিত হয়। সেনাবাহিনী,পুলিশ,বিজিবি,আনসার ও স্কাউট সদস্যদের সম্বন্ময়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্বে ছিলে উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভ’মি) ও নির্বাহী ম্যাজি্েট্রট কাফী বিন কবির।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই স্থানে অবৈধ বালু তোলা বন্ধ করতেই এই অভিযান চালান হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসি ল্যান্ড কাফী বিন কবির। তিনি বলেন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ওই অঞ্চলের ৩০০ জন মানুষ গন স্বাক্ষর করে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। সেকল অভিযোগ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড.মোস্তানিছুর রহমান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট প্রকৌশলি এনামুল হকের নির্দেশে আমরা ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু আমাদেরকে দূর থেকে দেখে তারা পালিয়ে যায়। একারনে কাউকে আটক বা জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিরি বলেন সোহরাব হোসেন ওরফে বিষে নামক একজন ব্যক্তি ও তার সহযোগিরাই ওখান থেকে বালু তুলছেন।
এদিকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের তথ্য সংগ্রহে নতুন তথ্য পাওয়া যায়। সেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারি সোহরাব হোসেন ওরফে বিষে শুনালেন অন্য এক প্রতারনার নতুন গল্প। বিষে বললেন,আমি বেশ কিছুদিন যাবৎ আমার কেনা জমির পাশের এই জমি (তার মতে এনিমি প্রপার্টি ) দখল করে আছি। কিন্তু ২০১৮/২৯ সালে আমাদের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন মুকুল আমাকে ডেকে পাঠান। তিনি বললেন,“এই জমির প্রকৃত মালিক  (হিন্দুরা, যারা এখন ভারতে থাকে) আমাদের নামে পাওয়ার করে দিয়েছে (সেসময় তার সাথে বাটিকামারির হেলাল ও জগন্নাথপুরের আশিক ছিল। তাদেরকে দেখিয়ে)। তাই এই জমি তোমার রাখতে হলে (৫৮ শতক জমি। সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিঘা প্রতি) ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। তখন আমি দুটি গরু বিক্রি করে ও শিশু নিলয় থেকে লোন করে চেয়ারম্যানের হাতে ৪ লাখ টাকা দিই। বাকি টাকা পরে দেওয়ার কথা। সেই থেকে এই জমি আমি করছি।
চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন,টাকার বিষয়টি হেলাল জানে। এর মধ্যে অনেকে আছে।
তবে ওই মৌজার অন্যান্য জমির মালিক মহাসিন,উজ্জ্বলসহ আরো অনেকে জানিয়েছেন, নারায়নপুর ইউনিয়নের সোহরাব খা ওরফে বিষেসহ বেশ কিছু লোক অনেক দিন ধরে বাটিকামারি মৌজা সরকারি খাস খতিয়ানের (১/১) ২০১নং দাগে ৩ বিঘা জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। ভয়তে কেউ কোনো কথা বলতে পারে না। এই বিষে ও তার বাহিনীর অবৈধ বালু তোলার কারনে পাশেই আমাদের বাক্তিমালিকানা জমিগুলো ভেঙ্গে আবাদের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন, বেশ আগে ওই জমি লিজের (ডিসিআর) মাধ্যমে বাটিকা মারির তোতা নামে এক ব্যক্তি চাষবাস করতেন। কিন্তু এই বিষে ও তার সহযোগিরা তাকে ভয়ভিতি দেখিয়ে জমিগুলো দখল করে নেয়।
বাটিকামারি গ্রামের মৃত শুকুর আলী ওরফে মাওলা বক্স এর ছেলে ভ’মিহীন সেই তোতা মিয়া (৬০) শুনালেন তার দুঃখের কথা। তিনি বলেন ৩৫ বছর আমি এই জমিতে আবাদ করছিলাম। শেষ ২০০০ সালে আমি ডিসিআর কাটি। গত ২ বছর আগে (২০১৯ সাল) এই বিষে চৌগাছা থেকে মস্তান হায়ার করে নিয়ে এসে আমার জমি দখল করে নেয়।
এদিকে দেশব্যাপী অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) কড়া বার্তা দিয়েছিল মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। তারপরেও উপজেলার অনেক স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের খবর আসা থেমে নেই।

ফেসবুকে লাইক দিন