আজঃ শুক্রবার ● ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ ● ২৬শে এপ্রিল ২০২৪ ● ১৬ই শাওয়াল ১৪৪৫ ● রাত ১০:৫৩
শিরোনাম

By: মুক্তি বার্তা

বানারীপাড়ায় চাখার সরকারি কলেজের কম্পিউটার আপারেটর মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

ফাইল ছবি

রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় শেরেবাংলার চাখারে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত সরকারি ফজলুল হক কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি ওই কলেজে তৃতীয় শ্রেণীর ৭টি শূন্য পদের সুযোগ নিয়ে সুকৌশলে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। এজন্য কলেজের সবাই তাকে সমীহ করে চলেন। জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর পদ মর্যাদার ৭টি অফিস সহায়ক কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। এগুলো হলো প্রধান সহকারী, অফিস সহকারী, হিসাব রক্ষক, ক্যাশিয়ার, স্টোর কিপার, ইলেকট্রিশিয়ান ও ক্যাশ সরকার। কম্পিউটার অপারেটর মোস্তাফিজ অতিরিক্ত ওই ৭টিসহ মোট ৮টি পদের দায়িত্ব পালন করে তিনি এখন ‘ওয়ান ইন এইট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। কাজেই অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের তারই দ্বারস্থ হতে হয়। তার সিন্ডিকেটে হয় ভর্তি বানিজ্য। একাই বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ কলেজে তিনি মাত্র ৩/৪ বছর চাকরি করে কামিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এছাড়াও কলেজের বিশাল সম্পত্তি নূন্যতম মূল্যে লিজ নিয়ে চড়া দামে নগদ খাজনায় লাগিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ কামিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাখার কলেজের নামে মোট ৩৭ একর সম্পত্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭ একর শুধু ধানী জমি। বাকিটা বাড়ি ও ভিটা। যেমন: দাশেরবাড়ি, বকশিবাড়ি, টোলেরবাড়ি, পুবেরবাড়ি, হিন্দু ছাত্রাবাস, মুসলিম ছাত্রাবাস, পালেরবাড়ি, বিজ্ঞানভবন ও বিশাই শীলেরবাড়ি নিয়ে মোট ৩০ একর জমি। ওই জমিগুলো কম্পিউটার অপারেটর মোস্তাফিজুর রহমান স্বল্প মূল্যে লিজ নিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সুইপার কাম ঝাড়ুদার পিটার বেপারীর দ্বারা সাধারণ জনগণের কাছে চড়া দামে বাৎসরিক নগদ খাজনায় লাগায়। নেপথ্যে যার তত্ত্বাবধানে থাকেন কম্পিউটার আপারেটর মোস্তফিজুর রহমান। আর এ জমির নগদ খাজনার টাকা উত্তোলন করে ঝাড়ুদার পিটার। মোস্তাফিজুর রহমান টাকার একটি অংশের ভাগীদার। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অভিযোগ রয়েছে সে চাখারে অল্প টাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন। এখন সে বরিশাল সিটিতে ২৫ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে থাকেন এবং সাড়ে ৪ লাখ টাকা মূল্যের মোটরসাইকেলে অফিসে যাতায়াত করে থাকেন। তিনি সামান্য একজন কর্মচারী হয়েও দুর্নীতি করে এখন দামি বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ সব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার  কম্পিউটার অপারেটর মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চাখার গ্রামেরই মৃত হানিফ হাওলাদারের পুত্র মো. আ. বারেক হাওলাদার। যার অনুলিপি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, বরিশাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের বরাবর। অভিযোগপত্রে তিনি মোস্তাফিজুর রহমানকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান। এ ব্যাপারে কম্পিউটার অপারেটর মোস্তাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন আমি শুধুমাত্র কলেজে কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্বই পালন করছি। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ৮টি পদে দায়িত্ব পালনের প্রশ্নই আসে না। এছাড়া কলেজে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর পদ খালি ৭টি নয় ৫টি ।  এ প্রসঙ্গে চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.এস.এম হাবিবুল ইসলাম বলেন,দীর্ঘদিন ধরে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর  শূন্য পদে নিয়োগ না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে অনেক সময় অভিজ্ঞদের দিয়ে একাধিক পদের কাজ করাতে হয়। তার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতি করার কোন সুযোগ নেই জানিয়ে কলেজের জমির লিজ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার যোগদানের পূর্বে কি হয়েছে তা তিনি জানেন না । তবে চলতি বছর কলেজের সম্পত্তি পরিমাপ করে লিজ দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম নির্দেশ দেন। করোনা মহামারীর কারনে পরিমাপ করতে না পারায় এবছর জমি লিজ দেওয়া স্থগিত রয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন