আজঃ বৃহস্পতিবার ● ২৫শে আশ্বিন ১৪৩১ ● ১০ই অক্টোবর ২০২৪ ● ৬ই রবিউস-সানি ১৪৪৬ ● বিকাল ৫:১৩
শিরোনাম

By মুক্তি বার্তা

চৌগাছায় নারায়নপুর কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে বেহাল অবস্থা

ফাইল ছবি

চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় নারায়নপুর কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কপূর্ব পাশ থেকে ভেঙ্গে নদের বিলিন হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। অতিসম্প্রতি ঘুর্ণিঝড় আম্ফান ও অতিবর্ষনের ফলে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে ও বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহনসহ জনসাধারণ। ২০১৫ সালে সেতুটির সংযোগ সড়কসহ নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সেতুটির নির্মানের ২ বছর পর থেকে দুই পাশের সংযোগ সড়কে ফাঁটল দেখা দিয়েছে।

রবিবার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কোন কোন স্থানে সড়ক ভেঙ্গে নদেরগর্ভে চলে গেছে। যে কোন সময় দুই পাশের মাটি ধসে সংযোগ সড়কটি কপোতাক্ষ নদে বিলিন হয়ে যেতে পারে। সংযোগ সড়কের ফাঁটলের ফলে সেতু দিয়ে অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ ভাবে হালকা যানবাহন চলাচল করলে ও ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেতুটিতে চলাচল কারি দেবীপুর বাজারের ব্যাবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, সেতুটি নির্মান শেষে দুই পাশের সংযোগ সড়কটি অন্য এলাকা থেকে মাটি এনে দুইরো সড়ক করার কথা ছিল। কিন্তু সংযোগ সড়কটি খুবই সরু আকারে নির্মান করা হয়েছে।

নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, সড়ক ও জনপদ কাজটি টেন্ডারের মাধ্যমে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান করেন। তবে কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান করেছেন তা আমার জানা নেই। এ সড়কে ফাঁটলের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলি অফিসে ও সওজকে জনানো হয়েছে। কিন্তু কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সড়কটি অবিলম্বে সংস্কারের জন্য এলেকাবাসী যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।

জানা যায়, ২০০০ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উদ্যোগে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যায়ে উপজেলার নারায়রপুর কপোতাক্ষ নদের উপর একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতুটি নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগ নির্ধারিত সময়ে টেন্ডার আহবান করে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রথম বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ শেষ করলে সেতুটির নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ থাকে। ২০১১ সালে ২৬শে মে এলাকাবাসীর পক্ষে ঢাকা ট্যাকসেসবার সমিতির বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.এ বি এম আহাসানুল হক আহসান সেতুটি নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন করেন। আবেদনটি আমলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেতুটির অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ন করার জন্য পুনরায় অর্থ বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। সেতু মন্ত্রণালয় সেতু নির্মান কাজ শেষ করার জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগকে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অর্থায়ানে সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।

এ সেতুটি নির্মাণ হওয়ার ফলে নারায়নপুর, পেটভরা, বকশিপুর, সুইতলা, ইলেশমারী, ভগমানপুর, গুয়াতলি, চাঁদপাড়াসহ পার্শ^বর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার একাংশের মানুষের চলাচলে ব্যাপক সুবিধা পায়। এদিকে চৌগাছা উপজেলার দেবীপুর, হাকিমপুর, পাতিবিলা, নিয়ামতপুর, মুক্তদাহ, মাঠচাকলাসহ কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রেও। স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নদ ও মূল সড়ক থেকে অনেক উঁচু। সেতুর সংযোগ সড়কও উঁচু করা হয়েছে। ফলে সংযোগ সড়কে ব্যাপক সমস্য দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া সেতু সংলগ্ন সড়কের দুপাশেই রয়েছে বড় বড় পুকুর।

এ ব্যাপারে নারায়ণপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম, আমিনুর রহমান, তুহিনুর রহমানসহ অনেকে জানান সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও সেতুটির সংযোগ সড়কে সঠিক ভাবে রুলার না করায় এমনটি হয়েছে। সেতুটির সংযোগ সড়কের নিচে পাথরের পরিবর্তে নিন্মমানের ইট, লোকাল বালি ও সিমিত পরিমানে সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এলাকাসী বলেন সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষে উৎদ্বোধন করার জন্য যে নেমফলকটি তৈরি করা হয়েছিল সেটিও উদ্বোধনের আগেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলি আব্দুল মতিন বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের ছিল। যার ফলে কি কারনে বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে তা তারাই বলতে পারবেন। বর্তমানে এলজিডির নিকট হস্থান্তর করা করা হয়েছে। ব্রীজের পূর্ব পাশের সংযোগস্থলের সড়ক ভেঙ্গে নদগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমি সেখান কার দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলীকে বলছি অতিদ্রুত কি ভাবে সংস্কার করা যায় সেই চেষ্টা করছি।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন