আজঃ শুক্রবার ● ২৯শে চৈত্র ১৪৩০ ● ১২ই এপ্রিল ২০২৪ ● ২রা শাওয়াল ১৪৪৫ ● রাত ১০:৩৭
শিরোনাম

By: মুক্তি বার্তা

চৌগাছায় ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদসভা

ফাইল ছবি

চৌগাছা প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় সনদ বাতিল হওয়া অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদসভা করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদ। ২২ ডিসেম্বর সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সংগঠনটির কার্যালয়ে এই প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সভা শেষে চৌগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের প্রচার সম্পাদক অঅনোয়ারুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয় যে, চৌগাছা উপজেলায় ২৬ ব্যক্তি মিথ্যা ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলে আসছিলেন। তাদের মধ্যে ৪ ব্যক্তি শফিয়ার রহমান,নুরু মিয়া,ইউসুফ আলী এবং শাহাজান আলী আদৌ মুক্তিযোদ্ধা না। এছাড়া অন্য ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু তারা যুদ্ধাহত নন। এ বিষয়ে চৌগাছার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি শুনানি করেন। অভিযোগে ২৬ জনের মধ্যে ৪জন শুধু যুদ্ধাহতই না বরং তার মুক্তিযোদ্ধাই নন প্রমানিত হওয়ায় তাদের ভাতা বন্ধ করে দেন। ঐ বছরেই ২৩ জানুয়ারি কাউন্সিলের ৫৩তম সভার আলোচ্য সূচি ৮.০১ লিয়াকত আলী, ৮.০২ নূর হোসেন, ৮.০৩ শফিয়ার রহমান, ৮.০৪ ফজের আলী ৮.০৫ শাহাজান আলী, ৮.০৬ অহেদ আলী, ৮.০৭ অঅসাদুল ইসলাম, ৮.০৮ মোঃ সামসুদ্দিন৮.০৯ নুরু মিয়া,৮.১০ মোহাম্মদ আলী, ৮.১১ সামছুল আলম,৮.১২ নুর ইসলাম,৮.১৩ চকম আলী ও ৮.১৪ আলোচ্য সূচিতে সহিদুল ইসলামের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ঐ বছরের ১১ মার্চ ৫৪তম সভায় উপরোক্তদের সাথে ৮.১৪ শহিদুল ইসলামের “যুদ্ধাহত” ও মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল হয়।  একই বছরের ৫জুলাই  “জামুকা”র ৫৭তম সভার আলোচ্য সূচির ৫.০২ বেগম পানু বিবি, ৫.০৩ সিরাজুল ইসলাম, ৫.০৪ খায়রুল ইসলাম, ৫.০৫ ইউসুফ আলী, ৫.০৬ আবুল কাশেম এবং আলোচ্য সূচি ৫.০৭ আসাদুল ইসলামের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এবং বাকিদের ভাতা বন্ধ আছে।
সেই কারনে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট বাতিল হওয়া মরহুম চকম আলীর ছেলে রেজাউল করিম কালুর নেতৃত্বে গত ১৮ ও ২০ ডিসেম্বর অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি ও টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে ঝাটা হাতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। সে বিক্ষোভে যেসকল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা াংশগ্রহন করেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়। এবং স্থানীয় একটি মহল স্বার্থ হাসিলের জন্যই একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বনোয়াট তথ্য প্রচার করেছে। আর এদে কে চৌগাছার ৭১’র প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ও অস্ত্রধারি রাজাকার মুজাহিদ ও ফরিদুল ইসলামের পরিবার ইন্ধন দিচ্ছে বলে দাবী করেছেন ঐক্য পরিষদের নেতারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন যে ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের দিয়ে মানববন্ধন করানো হয়েছে সেই চকম আলী আদৌ মুক্তিযোদ্ধা নন। সঠিক মুক্তিযাদ্ধা না হওয়ার অভিযোগে সরকারি নির্দেশনায় তারও ভাতা বন্ধ আছে। আর সেই মানব বন্ধনে যে ৫/৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাদের কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধা’ই নন। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যুদ্ধাহত না হয়েও ‘যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা’ উত্তোলন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত না হওয়ায় সরকারি নির্দেশে গত ৪ বছর ধরে তাদের ভাতাও স্থগিত রয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয় মোহম্মদ আলী, সামসুল আলম, নুরুল ইসলাম, কেরামত আলী, সাজেদুর রহমান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করতেন। বর্তমানে যুদ্ধাহত নন প্রমানিত হওয়ায় তাদের ভাতা স্থগিত করেছে সরকার।
মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন, সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ,অর্থ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আরজান আলী, প্রচার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল আরেফিন, সহ-দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ, প্রজন্ম বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হকসহ প্রায় ৩৫/৪০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদের নেতারা একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য অপপ্রচার করায় উল্লেখিত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়েছেন।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন