আজঃ শনিবার ● ৭ই বৈশাখ ১৪৩১ ● ২০শে এপ্রিল ২০২৪ ● ১০ই শাওয়াল ১৪৪৫ ● বিকাল ৪:৩০
শিরোনাম

By: মুক্তি বার্তা

উজিরপুরে ৯০০ বিঘা জমিতে মৎস্য চাষ করে ৪’শ চাষির ভাগ্য বদল

ফাইল ছবি

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি॥
বরিশালের উজিরপুরে এক সময়ের অবহেলিত এক ফসলের জমিগুলো এখন যেন সোনার জমিতে পরিণত হয়েছে।  অল্প সময়ে এ অসম্ভব কাজকে সম্ভব করেছেন গ্রামঞ্চলের মানুষের একত্রিত হয়ে গড়ে তোলা মৎস্য সমবায় সমিতি নামক মৎস্য চাষ প্রকল্প। বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলার বিলজুড়ে ময়লা অবর্জনার কারনে তেমন কোন ফসল হতো না। সেই জমিতে প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতের মৎস্য চাষ করে শত শত মানুষ নিজেদের ভাগ্যবদল করেছেন। ওইসব পরিবারে দারিদ্রতা দূর হয়ে এসেছে স্বচ্ছলতা। তারা মৎস্য চাষাবাদ শেষে শুকনো মৌসুমে সেই জমিতে ধানের চাষাবাদ করেন। সে কারনে একই জমি ১২ মাস চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করে জমির মালিকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।
জানাগেছে,এক সময়ের অবহেলিত সাতলা জনপদে’র রূপকার  উজিরপুর উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি ও সাতলা ইউপির  প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আজাদ পটিবাড়ি পতিত জমির একাধিক বৈধ মালিকদের নিয়ে সমবায় সমিতি করে মৎস্য চাষ শুরু করেন
প্রায় এক যুগ আগে ।  তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর মৎস্য ঘেরের মাছ বিক্রি করে জমির পরিমান ও চাষাবাদে অংশিদারিত্বর পরিমান মতো লৈভাংশ টাকা তুলে দেয়া হয় জমির মালিকের হাতে । মৎস্য ঘের সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকরা ঘেরটি পরিচালনা করেন।

গত বছর সাতলার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল  খালেক আজাদ মারা গেলে তার ছেলে মশিউর মিয়া ও প্রিয় লাল মন্ডল সমিতি’র মাধ্যমে অন্যসব সদস্যদের নিয়ে মৎস্য ঘেরটি পরিচালনা করছেন। ওই ঘেরের মধ্যে আব্দুল খালেক আজাদের জমির পরিমান বেশী হলেও  মশিউর সকল সদস্যদের মতো লাভের টাকা সমপরিমান ভাগ করে নেন। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সাম্প্রতিক সময়ে  ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের ক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সাতলার পটিবাড়ি ৯০০ বিঘা জমির  মৎস্য ঘেরটি তাদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে নানা ষড়যন্ত্র’র ফাঁদ তৈরী করে উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ  উঠেছে। হঠাৎ করে ওই মহল ঘেরটি নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করলেও ঘেরের জমির অধিকাংশ মালিকরা একাট্ট্রা হয়েছেন তাদের ঘেরটি রক্ষা করার জন্য। পটিবাড়ি মৎস্য ঘেরের জমির মালিক হরসিদ বৈদ্য জানিয়েছেন, তার পতিত জমিতে মাছ চাষ করে সে লাভবান হয়েছেন। একই কথা জানান আতাহার বিশ্বাস নামক অপর এক জমির মালিকরা। কৃষক সুমনাথ হালদার বলেন তার জমিতে সমিতির মাধ্যমে তিনি মৎস্য চাষ করতে চান । মাছ  বিক্রি’র পর ওই জমিতে বিনা খরচে ধান চাষের উপযোগী জমি পান । একই জমিতে ফলে ধান ও মৎস্য চাষ করে তিনি অধিক লাভবান হচ্ছেন । তিনি অভিযোগ করেন একটি মহল তাদের মৎস্য ঘেরটি নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।  সাতলার পটিবাড়ি মৎস্য সমিতির সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ প্রিয় লাল মন্ডল বলেন, ৪ শত সদস্যের মাধ্যমে ঘেরের জমিতে মাছ চাষ করা হয়। মাছের ঘেরের লাভ সকল সদস্য সমান ভাগে পান। অনেক কৃষকই ঘেরের লাভের টাকায় শুকনো মৌসুমে ধান চাষ করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছেন। একটি মহল ঘেরটির নিয়ন্ত্রন নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তার চাষীদের নানা ভাবে হুমকিও দিচ্ছেন। সাতলার প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান খালেক আজাদের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান বলেন, শতশত মানুষ পটিবাড়ি মাছের ঘের দিয়ে লাভবান হলেও একটি কুচক্রি মহল যাদের ওই ঘেরে  কোন জমি নাই তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। ঘেরের সমিতি অকার্যকর করে ঘেরটি তাদের দখলে নিয়ে মাছ চাষ করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।এ ঘেরের মধ্যে আমাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি রয়েছে । তবে আমরাও জমির অন্যসব মালিকদের মতো সমান ভাগে লাভের টাকা ভাগ করে নেই ।

মুবার্তা/এস/ই

ফেসবুকে লাইক দিন